স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ-অনাকান্তির কন্ঠ

মো: আবদুল কাদের,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৮ জুলাই, ২০২০
  • ৩৬৭ বার পঠিত

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নববধুকে গলাটিপে হত্যা রহস্য অত্যান্ত বিচক্ষনতার সহিত উদঘাটন করেছে অফিসার ইনচার্জ আবদুল জলিল।
নববধু বায়না ধরেছে বাপের বাড়িতে যেতে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে হাতে টাকা না থাকায় নববধুকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যেতে রাজি হয়নি স্বামী। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই মধ্যে স্বামীকে ধাক্কা দেন স্ত্রী। আর জিদের বসে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করেন পাষন্ড স্বামী।
ঘটনাটি প্রায় আড়াই মাস আগের হলেও এর রহস্য উদঘাটন হয়েছে শুক্রবার (১৭ জুলাই) রায়পুর থানা পুলিশ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারী স্বামীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
থানা পুলিশ জানায়, গত ছয় মাস আগে রায়পুর উপজেলার চর মোহনা ইউনিয়নের দক্ষিণ রায়পুর গ্রামের মো. আলী হায়দারের পুত্র মো. রাশেদের (২৪) সাথে পারিবারিকভাবে একই উপজেলার চরবংশী গ্রামের খোকন ছৈয়ালের মেয়ে সীমা আক্তার সুমির (১৯) বিয়ে হয়। গত ৪ মে রাত সোয়া একটার দিকে স্বামীর বাড়িতে সুমির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। স্বামী রাশেদ এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দাবি করলেও সুমির মাতা ছালেহা বেগম রায়পুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। পরে সদর হাসাপাতালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়।
রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সুমির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পুলিশের হাতে আসে। রিপোর্টে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এ ঘটনার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরদিন (শুক্রবার) পুলিশ স্বামী রাশেদকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রাশেদ তার স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা বিষয়টি স্বীকার করে। পরে ওইদিন তাকে আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় হত্যার জবানবন্দি দেয় ঘাতক স্বামী রাশেদ।
ওসি বলেন, ‘রাশেদকে জিজ্ঞাসাবাদে এবং আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সে স্বীকার করেছে- তার নতুন স্ত্রী তাকে বাপের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু করোনাকালীন লকডাউনের কারণে স্বামী রাশেদের আয় রোজগার না থাকায় শ্বশুর বাড়িতে যেতে রাজি হয়নি। এ সময় রাশেদ তার স্ত্রী সুমিকে বলেছে-নতুন শ্বশুর বাড়িতে যেতে হলে কিছু কিনে নিতে হবে, এ মূহুর্তে তার হাতে কোন টাকা নেই।
এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে রাগ অভিমান ও কথা কাটাকাটি হয়। এ পর্যায়ে স্বামী রাদেশকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় স্ত্রী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে গলাটিকে হত্যা করে রাশেদ। পরে স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে সে সকলকে জানায়। কিন্তু ঘটনাটি সন্দেহ হলে এ বিষয়ে অপমৃত্যু মামলা করে সুমির মা।’
ওসি আরও বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে আমরা যখন জানতে পেরেছি এটি হত্যা, তখন অত্যন্ত বিচক্ষণতার সহিত আমি এবং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিপন বড়ুয়া ও এসআই ইয়াছির আরাফাতসহ বিশেষ অভিযান চালিয়ে সুমির স্বামী রাশেদ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনাটি স্বীকার করায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে ওই মামলায় ঘাতক রাশেদকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে তার জবানবন্দি গ্রহণ করে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয় বিজ্ঞ আদালতের বিচারক।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর