সন্ত্রাসীদের হুমকিতে পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়া ব্যবসায়ী
কেরাণীগঞ্জে বেপরোয়া সন্ত্রাসী জয়নাল ও তার সহযোগীরা
মারুফ সরকার ,ঢাকা :
সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকি মুখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে নিজের ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছেন এক ব্যবসায়ী। রাজধানীর অদূরে কেরাণীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকার সৈয়দ মোস্তফা কামাল হোসেন নামের এ ব্যবসায়ী প্রাণভয়ে এখন ঢাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।
চীন থেকে স্টেশনারী সামগ্রি আমদানীকারক এ ব্যবসায়ী গত একমাস যাবৎ তার সন্ত্রাসীদের ভয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। একই সাথে নিজের বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও দখল নেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘটনায় তিনি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। পাশাপাশি থানায় জিডিসহ আদালতে মামলাও করেছেন তিনি। মামলার পরও সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ন না কমায় নিজের জীবন শঙ্কাতে রয়েছেন তিনি।
কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, কেরাণীগঞ্জের ভয়াবহ সন্ত্রাসের নাম জয়নাল আবেদীন। তার বেশকিছু সহযোগীও রয়েছে। এরা লোকজনের জমির উপর রাতারাতি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। পরে জমির মালিক আসলে তার নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা না দিতে চাইলে শুরু হয় নানা ধরনের অত্যাচার নির্যাতন এমনকি হত্যার হুমকি।
কামাল হোসেনের অভিযোগ, তার নিজের জমিও একই কায়দায় দখল করার চেষ্টা চালায়। তিনটি জায়গায় এভাবে দখল করার জন্য সাইনবোর্ডও উঠায়। আমি এর প্রতিবাদ করতে গেলে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। আর এ টাকা না দেয়াতেই নেমে এসেছে নির্যাতন।
তিনি বলেন, গত ১৮ মে দুপুর জিনজিরা টু সৈয়দপুরে মেইন রোডের গদাবাগ ব্রিজের পশ্চিম পাশে হাতের ডানপাশে এস এস ডোর এন্ড ফার্নিচার নামের এক প্রতিষ্ঠানে আমি ব্যবসায়িক লেনদেনের করার জন্য গেলে জয়নাল বাহিনী আমার উপরে হামলা করে। ওই সময় ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ আসে । পুলিশের সামনেই তারা আমাকে হত্যার চেষ্টাও চালায়। এ সময় ওইস্থানে জয়নালের সাথে মহাসিন, নুরুমিয়া, মেহেদী, সাইদুল, মিজানসহ আরো ১০ /১৫ জন ছিল। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে আমাকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। পরে ওসি আমাকে জিডি করার উপদেশ দিলে সেখানে একটি জিডিও করি। একইভাবে আদালতেও মামলা করি।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, জয়নালের ১৫/২০ জন সাঙ্গপাঙ্গ রয়েছে। এদের কাজই চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মমূলক কাজ। তার নামে ১২/১৩ টি মামলাও রয়েছে। র্যাবের হাতে ধরাও পড়েছে কয়েকবার। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও একই কর্মকান্ড করে।
কেরাণীগঞ্জ মডেল ও দক্ষিণ থানা সূত্র জানায়, কামালের অভিযোগের বিষয়ে তারা অবগত রয়েছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবেও তারা জানিয়েছেন।
এদিকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক জাফর আলী বলেন, জয়নালসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তিনি ৩ টি মামলার তদন্ত করছেন। গ্রেফতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জয়নালের নামে গ্রেফতারী পরোয়না রয়েছে কি না তা জানিনা। যেহেতু নতুন এসেছি খোঁজ নিচ্ছি। গ্রেফতারী পরোয়না থাকলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সর্দার বলেন, এ বিষয়ে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্তও চলমান। আইনের উর্ধ্বে কেউ না। অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।