নিজস্ব প্রতিনিধি:
দীর্ঘ আলোচনার পর সাভার উপজেলার ইয়ারপুর ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার বিনিময়ে নৌকার প্রতীক বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মোশারফ হোসেন মুছাকে মনোনয়নের দায়িত্ব নেন (সামারি) আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন।
বিভাগীয় দায়িত্বে থাকা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের সাথে চুক্তি করে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের ভুল তথ্য সরবরাহ করে মরহুম সৈয়দ আহমেদ ভূইয়া মাস্টারের ছেলে সাজানো হয় মুছাকে।
এদিকে মোশারফ হোসেন মুছা নৌকা প্রতীক পেয়ে ভোট ছাড়াই চেয়ারম্যান হওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় নেতাকর্মী ও ভোটাররা। যে কোনো মূল্যে নৌকাকে বিজয়ী করতে আরো ৩ কোটি টাকা ঘোষণা দিয়েছেন মুছা। আর এসব অর্থ যোগান দিচ্ছেন কয়েকটি হাউজিং কোম্পানি।
সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা ও ইয়ারপুর ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন সৈয়দ আহমেদ ভূইয়া মাস্টার। তার পুত্র সুমন আহমেদ ভূইয়া আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাবা মারা যাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে এলাকা বাসীর চাপে প্রার্থী হয়েছেন সুমন ভূইয়া।
এদিকে আওয়ামীলীগের হয়ে সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মঞ্জু দেওয়ান এবং আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তারা অর্থে দুর্বল থাকায় তাদের মনোনয়ন অনিশ্চিত হয়ে যায়। মোশারফ হোসেন মুছাকে নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় হতাশ তারাও।
মনোনয়ন প্রত্যাশী সিনিয়র দুই নেতা জানান, মুছা এক সময় ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ডা: দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুর অনুসারী ছিলেন। পরে কিছুদিন সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গনি ও সাভার উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ কবিরের সাথে জাতীয় পার্টি করেন। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে জোটভুক্ত লাঙ্গল ফেলে অনেকটা কৌশল খাটিয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদের হাত ধরে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি ।
অর্থের বিনিময়ে নৌকা প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে জানতে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের কাছে জানতে চাইলে তিনি মিটিংয়ের সুর তুলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তৃণমূলের পছন্দের তালিকায় মুছা রয়েছেন এমন বার্তার ভিত্তিতে মনোনয়ন বোর্ড তাকে মনোনীত করতে পারে বলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
এদিকে আওয়ামীলীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে জানান, যেহেতু মরহুম সৈয়ত আহমেদ ভূইয়া মাস্টার আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা। তিনি মারা যাওয়ার পর তার পুত্র আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন আহমেদ ভূইয়াকে নৌকার প্রতীক দেওয়া উচিত ছিল কারণ হিসেবে তিনি তার বাবার ভোট ব্যাংকের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এ এর নতুন কি .? তুহিনের দুর্নীতি নতুন নয়। গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি দুর্নীতি দমন কমিশন সব সম্পদের অনুসন্ধান করছেন। ইয়ারপুর ইউনিয়নে আওয়ামী পরিবারের যে কেউ নির্বাচিত হলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। স্থানীয় ভোটাররা যদি চায় জনপ্রিয়তা যাচাই করতে সুমন আহমেদ ভূইয়া লড়তে পারেন। তবে এটা হবে চ্যালেঞ্জিং। অর্থের লেনদেন বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব।
Leave a Reply