সাখাওয়াত হোসেন,পাঁচবিবি প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাটের আবাদ বেশি হলেও আশানুরূপ ফলন ও দাম কম হওয়ায় হতাশায় পড়েছে কৃষকরা । অতিরিক্ত মজুরি সহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা পাট বিক্রি করে কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না । সরকারি পাটকল গুলো বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই এবার পাট কিনছেন না । ফলে বাজারে পাটের দাম কমে যাওয়ায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে পাট চাষিদের মাঝে । অপরদিকে গতবারে পাটের দাম চলতি বছরের তুলনায় বেশি হলেও পাটের মুল্য বেশি পাওয়ার আশায় মজুদ করে রাখা সেই পাট পরে বিক্রি করে বড় ধরনে লোকসানে পড়েছেন ব্যবসায়িরা । ফলে পাট কেনাতে তাদেরও অনীহা ।
পাঁচবিবি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় , এবার উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে ১হাজার ৪শ ৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে । গত বছরের তুলনায় এ বছর ২০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে । গতবারের চেয়ে এবার পাটের দাম বেশি হবে এই আশায় কৃষকরা এবারও বেশি জমিতে পাটচাষ করেছেন ।
উপজেলার বাগজানা, ধরঞ্জী, আয়মারসুলপুর বালিঘাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় শেষ মৌসুমে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পাট জমি থেকে কাটা , জাগ দেয়া , আঁশ ছাড়ানো , শুকানোর কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষান কিষানিরা । কিন্তু বাজারে আশানুরুপ দাম না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।
উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের চড়া কেশবপুর গ্রামের কৃষক সায়েম উদ্দিন জানান , উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত প্রতি বিঘাতে জমিতে মোট খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা । এক বিঘা জমিতে পাট হয়েছে ৬ থেকে ৮ মণ, বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি করেছি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ টাকায় । পাটের দাম না থাকায় এবার লোকসান গুনতে হয়েছে । লাভের আশায় পাট চাষ করে যদি লোকসান হয় , তাহলে এ আবাদ আর করব না ।
বাগজানা ইউনিয়নের রামভদ্রপুর গ্রামের আসলাম হোসেন জানান , এবার বর্ষা মৌসুমের প্রথম দিকে পর্যাপ্ত পানি না হওয়ায় পাট জাগ দিতে বিপাকে পড়েন তারা । অন্যের পুকুরের পানি ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। একারণে পাট জাগ দেওয়া বাবদ অতিরিক্তি খরচ গুনতে হয়েছে।
পাট অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের মুখ্য পরিদর্শক আব্দুল হাকিম বলেন, জেলার দুই উপজেলায় বেশি পাটের আবাদ হয়। আর বাকি তিন উপজেলায় পাট চাষ কম হয়। গত বছরে কৃষকের অনেক পাট ব্যবসায়ী কেনার পর মজুত করার কারণে এ বছর পাটের দাম অনেক কম।গত বছরের অনেক পাট এখনো ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত আছে। তাই ব্যবসায়ীরা এবার পাট কম কিনছেন।
Leave a Reply